পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ:
তিনটি পার্বত্য জেলায় কার্যক্রম সমন্বয় সাধনের লক্ষ্যে ঐ তিন জেলাধীন সমগ্র এলাকাজুড়ে একটি আঞ্চলিক পরিষদ আছে ।
গঠন:
১ জন চেয়ারম্যান, ১২ জন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সদস্য, ৬ জন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর বাইরের বা বাঙালি সদস্য, ২ জন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মহিলা সদস্য, ১ জন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর বাইরের বা বাঙালি মহিলা সদস্য এবং তিন পার্বত্য জেলা পরিষদের ৩ চেয়ারম্যানসহ সর্বমোট ২৫ জন সদস্য নিয়ে আঞ্চলিক পরিষদ গঠিত হবে । চেয়ারম্যান অবশ্যই ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর হবেন এবং তিনি প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদা ভোগ করবেন । ১২ জন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সদস্যের মধ্যে ৫ জন চাকমা, ৩ জন মারমা, ২ জন ত্রিপুরা, ১ জন মুরং ও তনচৈঙ্গা এবং ১ জন লুসাই, বোম, পাংখো, খুমী, চক ও খিয়াং ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত হবেন । ৬ জন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সদস্যের মধ্যে প্রতিটি পার্বত্য জেলা হতে ২ জন করে থাকবেন । ২ জন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মহিলা সদস্যের মধ্যে ১ জন চাকমা এবং অপর জন অন্যান্য ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবেন। ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর বাইরের বা বাঙালি মহিলা সদস্য তিন পার্বত্য জেলার বাঙালি মহিলাগণের মধ্য থেকে হবেন। তিন পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানগণ ব্যতীত আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান ও অন্য সকল সদস্য জেলা পরিষদসমূহের সদস্যগণ কর্তৃক পরোক্ষভাবে নির্বাচিত হবেন। তিন পার্বত্য জেলার চেয়ারম্যানগণ পদাধিকারবলে এর সদস্য হবেন এবং তাঁদের ভোটাধিকার থাকবে। একজন সরকারি কর্মকর্তা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করবেন । আঞ্চলিক পরিষদের মেয়াদ হবে ৫ বছর ।
কার্যাবলি:
পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের কার্যাবলি হবে নিম্নরূপ-
১. তিন পার্বত্য জেলা পরিষদের অধীনে পরিচালিত সকল উন্নয়ন কর্মকাণ্ডসহ এদের আওতাধীন এবং এদের উপর অর্পিত বিষয়াদির সার্বিক তত্ত্বাবধান ও সমন্বয়;
২. পৌরসভাসহ স্থানীয় পরিষদসমূহ তত্ত্বাবধান ও তাদের কর্মকাণ্ডের সমন্বয়সাধন;
৩. পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের কার্যাবলির সার্বিক তত্ত্বাবধান ;
৪. পার্বত্য জেলাসমূহের সাধারণ প্রশাসন, আইন-শৃঙ্খলা ও উন্নয়নের তত্ত্বাবধান ও সমন্বয়;
৫. ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর রীতিনীতি, প্রথা ইত্যাদি এবং সামাজিক বিচার তত্ত্বাবধান ও সমুন্নত রাখা ;
৬. জাতীয় শিল্পনীতির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে পার্বত্য অঞ্চলে ভারী শিল্প স্থাপনে লাইসেন্স প্রদান;
৭. দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা এবং এনজিওদের কার্যাবলির সমন্বয়সাধন ।
আয়ের উৎস:
প্রতি অর্থবছর শুরু হওয়ার পূর্বে পরিষদ ঐ বছরের সম্ভাব্য আয় ও ব্যয়-সম্বলিত বিবরণী বা বাজেট প্রণয়ন ও অনুমোদন করবে । নিম্নোক্ত উৎস হতে প্রাপ্ত অর্থ নিয়ে আঞ্চলিক পরিষদের তহবিল গঠিত হবে-
ক. পার্বত্য জেলা পরিষদের তহবিল হতে প্রাপ্ত অর্থ, যার পরিমাণ সময় সময় সরকার নির্ধারণ করবে ;
খ. পরিষদের উপর ন্যস্ত এবং তৎকর্তৃক পরিচালিত সকল সম্পত্তি থেকে প্রাপ্ত অর্থ বা মুনাফা ;
গ. সরকার বা অন্যান্য কর্তৃপক্ষের ঋণ ও অনুদান ;
ঘ. কোনো প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি কর্তৃক প্রদত্ত অনুদান ;
ঙ. পরিষদের অর্থ বিনিয়োগ থেকে অর্জিত মুনাফা ;
চ. পরিষদ কর্তৃক প্রাপ্ত যেকোনো অর্থ ;
ছ. সরকারের নির্দেশে পরিষদের উপর ন্যস্ত অন্যান্য আয়ের উৎস থেকে প্রাপ্ত অর্থ ইত্যাদি ।
Read more